Skip to main content
search

News_Budgetনারী ও জনবান্ধব বাজেটই টেকসই উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করবে, সভাপতির বক্তব্যে চিটাগাং উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি (CWCCI) এর প্রেসিডেন্ট আবিদা সুলতানা চট্টগ্রাম অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে “কেমন বাজেট চাই” শীর্ষক সভায় CWCCI এর কার্যালয়ে ২৮ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে এই কথা বলেন। তিনি তার বক্তব্যে নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন। CWCCI এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. মুনাল মাহবুব এইবারের বাজেটে স্যানিটারি ন্যাপকিন এর ভ্যাট মওকুফ ও শিশু খাদ্যের উপর ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব করেন। তিনি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদী ট্যাক্স হলিডে চালুর প্রস্তাব দেন এবং টার্নওভার ট্যাক্স ও ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্লেপে ভাগ করার প্রস্তাব করেন। CWCCI এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট লুৎমিলা ফরিদ এসএমই খাতে পূর্বের ন্যায় ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত টার্নওভার ট্যাক্স ও ভ্যাট মওকুফের প্রস্তাব দেন। তিনি এসএমই উদ্যোক্তাদের রপ্তানির সুবিধার্থে কম্বাইন্ড বন্ডেড ওয়্যারহাউজ চালু, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ট্যাক্স ফ্রি ইনকাম সীমা ৫ লক্ষ টাকা নির্ধারণ, পরোক্ষ কর মওকুফ করা, প্রত্যক্ষ কর বৃদ্ধি এবং ওষুধ শিল্পের কাঁচামালের উপর শুল্ক হ্রাস ও মাদকদ্রব্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধিসহ মুদ্রাস্ফিতি কমিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন CWCCI এর ভাইস প্রেসিডেন্ট নিশাত ইমরান, সুলতানা নূরজাহান রোজী ও শামীম মোর্শেদ, পরিচালক সাভিনা ইকরাম সিরাজি, নূর আক্তার জাহান, নাসরিন সুলতানা চৌধুরী, নূজহাত নূয়েরী কৃষ্টি, সৈয়দা কামরুন নাহার, সারিস্ত বিনতে নুর ও চৌধুরী জুবাইরা সাকী জিপসী, CWCCI এর প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আইভি হাসান ও প্রাক্তন পরিচালক শারমিন হোসাইন, নাসরিন সরোয়ার মেঘলা, জাহেদা আক্তার মিতা, ফেরদৌস ইয়াছমিন খানম ও শামিলা রিমা ও CWCCI এর সদস্যবৃন্দ।

 

নারী উদ্যোক্তারা ট্যুরিজম, এগ্রো, বিউটি পার্লার, বুটিকস, এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট, ফুড, শিপিং, রেস্টুরেন্ট সহ বিভিন্ন খাতে ভাগ হয়ে তাদের প্রত্যাশা ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন এবং সরকারের কাছে একটি অংশগ্রহণমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই বাজেট প্রণয়নের আহ্বান জানান।

 

 

 

তাদের উপস্থাপিত উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবনাগুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ

 

  1. অবৈধভাবে বিদেশী পণ্য আমাদের দেশে আসায় তা কম মূল্যে বিক্রি হওয়ার কারণে আমাদের দেশীয় ঐতিহ্যবাহী মসলিন ও জামদানী তার ন্যায্যমূল্য পায় না, তাই বিদেশী পণ্যের আমদানিতে ট্যাক্স বাড়ানো এবং সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারী করার পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের কাঁচামালের উপর আমদানি শুল্ক কমানো।
  2. নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আমদানি শুল্ক বাতিল অথবা সহনীয় মাত্রায় রাখা।
  3. পণ্যের পরিবহন খরচ হ্র্রাসে জ্বালানী তেলের মূল্য কমানো।
  4. ট্যুরিজম, ফুড ও রেস্টুরেন্ট সেক্টরে ব্যবহৃত আমদানিকৃত পণ্যের শুল্ক হ্রাস করা।
  5. এসি রেস্টুরেন্টর ১৫ শতাংশ এবং নন এসি রেস্টুরেন্টের ১০ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৫ শতাংশ করা।
  6. ট্রেড লাইসেন্সের ফি কমানো এবং মেয়াদ ৫ বছর পর্যন্ত উন্নিত করা।
  7. ট্যুরিজম সেক্টরে নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের জন্য বাজেটে থোক বরাদ্দ রাখা।
  8. নারীদের ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার কমানো।
  9. কাচাঁমালের উপর ধার্যকৃত ভ্যাট ও ট্যাক্স এর পরিমাণ কমানো।
  10. রেস্টুরেন্টের খাবার “ফুড টেস্ট ‘সাইন্স ল্যাবরেটরীজের ফি কমানো।
  11. সব ক্ষেত্রে উৎসে কর সম্পুর্ন বাতিল করা।
  12. ট্যুরিজম সেক্টরে ট্রেড লাইসেন্স ফি কমানো এবং ট্যুরিজম সেক্টরে ব্যবসার ধরণ ও ব্যাপ্তি অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ট্রেড লাইসেন্স ফি নির্ধারণ করা।
  13. নতুন ব্যবসায় উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত পরিমান বাজেট রাখা।
  14. ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পকে রক্ষা করার লক্ষ্যে তাঁতীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা।
  15. জাহাজ তৈরী শিল্পের উন্নয়নে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা।
  16. বিউটি পার্লার সেক্টরে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও ব্যবহৃত প্রসাধন সামগ্রীর আমদানি শুল্ক হ্রাস।
  17. বিউটি পার্লারের ভ্যাট ৫% করা।
  18. দেশীয় পোশাক শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট কাচাঁমাল এর উপর আমদানি শুল্ক কমানো।
  19. ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সর্বনিম্ন কর ৫০০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০০ টাকা করা।
  20. স্ট্রিট ফুড ব্যবসায়ের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ণ করা সহ তাদেরকে ভ্যাট এবং ট্যাক্সের আওতায় আনা।
  21. ক্ষতিকর পণ্যের উপর ট্যাক্স বাড়ানো ও উপকারী পণ্যের উপর ট্যাক্স কমানো।
  22. বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এলসি-তে যথাযথ মনিটরিং করা।
  23. দেশীয় ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য পাট জাত পণ্যের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা সহ পাট জাত পণ্যের কাচাঁমালের উপর শুল্ক কমানো।
  24. নারী উদ্যোক্তাদের জন্য জামানত বিহীন প্রকল্প ঋণ প্রবর্তন করা।
  25. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য প্রবর্তিত জামানত বিহীন ঋণের প্রথা কার্যকর করা।
  26. অনলাইন ব্যবসায়ীদের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণনয়ন-সহ তাদের ব্যবসায়ী হিসেবে সঠিক স্বীকৃতির ব্যবস্থা করা।
  1. ট্রেড লাইসেন্স গ্রহনের ক্ষেত্রে অগ্রীম আয়কর প্রদান প্রথা বাতিল করা।
  2. রপ্তানী ক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে রপ্তানির বিপরীতে প্রনোদনা প্রদান প্রবর্তণ করা।
  1. আঞ্চলিক নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে জেলা উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি কাজ করে যাচ্ছে। তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আর্থিক অনুদান প্রদানে বাজেটে থোক বরাদ্দ রাখা। পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ী ও বাঙ্গালী নারী উদ্যোক্তারা একই পরিবেশ ও একই অথনৈতিক কাঠামোর মধ্যে বসবাস ও ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। কিন্তু ভ্যাট, ট্যাক্স ও নানা ধরনের শুল্ক প্রদানের ক্ষেত্রে পাহাড়ী জনগোষ্ঠি ফি মওকুফ সহ নানান সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকে। ফলে বাঙ্গালী উদ্যোক্তাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হয় এবং নানা ধরনের বৈষম্যের স্বীকার হতে হয়। পার্বত্য অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে সার্বিক সমতার ব্যবস্থা করা।
    1. ক্লাস্টার বেইজড ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পে নিয়োজিত উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে উইম্যান চেম্বারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা প্রদানে বাজেট বরাদ্দ রাখা।
    1. নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়নে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা।
    2. কক্সবাজার সহ দেশের সকল পর্যটন শিল্পে নারীদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করা।

Leave a Reply

Close Menu